আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ জাফর কান্নাদবশির মতে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীন সশস্ত্র গোষ্ঠীর বর্তমান নেতা আবু মোহাম্মাদ আল জোলানির সঙ্গে মার্কিন ও ইউরোপীয় কূটনৈতিক মহলের সাম্প্রতিক ঘন ঘন যোগাযোগের কারণ হল এইসব দেশের নেতৃবৃন্দই সিরিয়ায় বাশার আসাদের সরকারকে উৎখাতের জন্য বিদ্রোহী নানা দল ও গোষ্ঠীকে সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তাসহ নানা ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এই গ্রুপগুলোকে ইউক্রেনে নিয়ে ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, উজবেক সশস্ত্র যোদ্ধাদের ইদলিবে নেয়া হয়েছে। আর এসবই করা হয়েছে মার্কিন সরকার ও ইসরাইলের এবং ইউরোপের কোনো কোনো দেশের সহযোগিতা ও সবুজ-সংকেত নিয়ে।
এই বিশেষজ্ঞের মতে সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে মার্কিন ও পশ্চিমা কূটনৈতিক মহলের যোগাযোগের এই পর্যায়ের দু'টি প্রধান লক্ষ্য হল সেখানকার চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন ও পশ্চিমাদের স্বার্থ-ভিত্তিক লক্ষ্যগুলো হাসিলের তৎপরতা জোরদার করা।
জাফর কান্নাদবশির মতে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে সিরিয়ায় নতুন সরকার গড়ার কাজ চলছে, কিন্তু একই সময়ে বহু দেশ সেখানকার রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাওয়া ও দেশটির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত এবং সেখানে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান। কারণ মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারসহ ইউরোপের কোনো কোনো সরকার সিরিয়ায় নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধারের পাঁয়তারা চালাচ্ছে এবং তারা নিজেদের ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের স্বার্থেই সিরিয়ায় একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গড়ে উঠুক তা চায় না।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞের মতে ইঙ্গ-মার্কিন সরকার বহু বছর ধরেই পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ধর্মীয় ফির্কাগত ও জাতিগত বিভেদ জোরদারের চেষ্টা করে আসছে। এ ছাড়াও তারা সিরিয়ায় এমন এক সরকারকে বসাতে চেয়েছে যারা পাশ্চাত্যের তেল ও গ্যাস স্থানান্তরের রক্ষক হবে। অর্থাৎ ইসরাইলের নিরাপত্তা এবং পাশ্চাত্যে তেল ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করলে সিরিয়ায় আসাদ-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর যারাই যে নামেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন মার্কিন সরকার ও ইউরোপ তাদের সহায়তা দেবে না।
কান্নাদবশির মতে, সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি ইউরোপ ও মার্কিন সরকারের সব ধরনের সহযোগিতার উদ্দেশ্য হল উপরোক্ত দু'টি স্বার্থ হাসিল করা। আর এ দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আপাতত তারা সাবেক সন্ত্রাসী নেতা জোলানিকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। কারণ বাশার আসাদের সরকারকে গণতান্ত্রিক উপায়ে বা বৈধভাবে উৎখাত করেনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। #
342/