পার্স-টুডে-সিরিয়ায় যে সরকারই আসুক না কেন ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষাই মার্কিন সরকারের জন্য সেখানে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য এবং যে সরকার ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে সে সরকারকে সিরিয়ায় দেখতে চায় না মার্কিন সরকার। আর এ কারণেই ওয়াশিংটন সিরিয়ায় কখনও শক্তিশালী সরকার দেখতে চায় না।

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ - ১৮:৪৪
ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষা এবং পাশ্চাত্যে তেল ও গ্যাস সরবরাহ জোলানিকে ক্ষমতাচ্যুত না করার মার্কিন শর্ত

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ জাফর কান্নাদবশির মতে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীন সশস্ত্র গোষ্ঠীর বর্তমান নেতা আবু মোহাম্মাদ আল জোলানির সঙ্গে মার্কিন ও ইউরোপীয় কূটনৈতিক মহলের সাম্প্রতিক ঘন ঘন যোগাযোগের কারণ হল এইসব দেশের নেতৃবৃন্দই সিরিয়ায় বাশার আসাদের সরকারকে উৎখাতের জন্য বিদ্রোহী নানা দল ও গোষ্ঠীকে সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তাসহ নানা ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এই গ্রুপগুলোকে ইউক্রেনে নিয়ে ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, উজবেক সশস্ত্র যোদ্ধাদের ইদলিবে নেয়া হয়েছে। আর এসবই করা হয়েছে মার্কিন সরকার ও ইসরাইলের এবং ইউরোপের কোনো কোনো দেশের সহযোগিতা ও সবুজ-সংকেত নিয়ে।

এই বিশেষজ্ঞের মতে সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে মার্কিন ও পশ্চিমা কূটনৈতিক মহলের যোগাযোগের এই পর্যায়ের দু'টি প্রধান লক্ষ্য হল সেখানকার চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন ও পশ্চিমাদের স্বার্থ-ভিত্তিক লক্ষ্যগুলো হাসিলের তৎপরতা জোরদার করা।

জাফর কান্নাদবশির মতে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে সিরিয়ায় নতুন সরকার গড়ার কাজ চলছে, কিন্তু একই সময়ে বহু দেশ সেখানকার রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাওয়া ও দেশটির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত এবং সেখানে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান। কারণ মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারসহ ইউরোপের কোনো কোনো সরকার সিরিয়ায় নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধারের পাঁয়তারা চালাচ্ছে এবং তারা নিজেদের ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের স্বার্থেই সিরিয়ায় একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গড়ে উঠুক তা চায় না।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞের মতে ইঙ্গ-মার্কিন সরকার বহু বছর ধরেই পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ধর্মীয় ফির্কাগত ও জাতিগত বিভেদ জোরদারের চেষ্টা করে আসছে। এ ছাড়াও তারা সিরিয়ায় এমন এক সরকারকে বসাতে চেয়েছে যারা পাশ্চাত্যের তেল ও গ্যাস স্থানান্তরের রক্ষক হবে। অর্থাৎ ইসরাইলের নিরাপত্তা এবং পাশ্চাত্যে তেল ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করলে সিরিয়ায় আসাদ-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর যারাই যে নামেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন মার্কিন সরকার ও ইউরোপ তাদের সহায়তা দেবে না।

কান্নাদবশির মতে, সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি ইউরোপ ও মার্কিন সরকারের সব ধরনের সহযোগিতার উদ্দেশ্য হল উপরোক্ত দু'টি স্বার্থ হাসিল করা। আর এ দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আপাতত তারা সাবেক সন্ত্রাসী নেতা জোলানিকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। কারণ বাশার আসাদের সরকারকে গণতান্ত্রিক উপায়ে বা বৈধভাবে উৎখাত করেনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। #

342/